বায়ু দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি নদীয়া শান্তিপুরে, চিন্তিত পরিবেশ কর্মীরাও।

 




নদীয়া :- নদীয়ার শান্তিপুরে বায়ু দূষণের মাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার ঘটনা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, শহরের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) ১৭৬-এ পৌঁছেছে, যা "অস্বাস্থ্যকর" মানদণ্ডে পড়ে। সাধারণত ০-৫০ এর মধ্যে AQI থাকলে তা সুস্থ বায়ুর লক্ষণ, কিন্তু ১৫১-২০০ এর মধ্যে AQI পৌঁছালে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এই পরিস্থিতি সামনে আসার পর থেকেই শান্তিপুরের সাধারণ মানুষ, পরিবেশকর্মী এবং রাজনৈতিক মহলে একপ্রকার অস্বস্তি দেখা দিয়েছে।



শান্তিপুরের পরিবেশকর্মী অনুপম সাহা জানিয়েছেন, শহরের বায়ু দূষণ বাড়ার মূল কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

শহরজুড়ে নির্বিচারে গাছ কাটা।উৎসবের সময় অতিরিক্ত জেনারেটরের ব্যবহার।বেআইনি ইঞ্জিনচালিত মোটর ভ্যানের চলাচল।তিনি আরও বলেন, এই সমস্যাগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ সচেতনতা এবং কঠোর ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে শান্তিপুরের পরিবেশ সংকটময় হয়ে উঠবে। গাছ কাটা এবং যানবাহনের দূষণ রোধে পৌরসভার কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করছেন তিনি।



পরিস্থিতি ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপি নেতা সোমনাথ করের অভিযোগ, শহরের পৌরসভার অনিয়ন্ত্রিত কার্যক্রমই এই সমস্যার মূল কারণ। তিনি বলেন, গাছ কাটা এবং বেআইনি যানবাহনের চলাচল পৌরসভার নজরের বাইরে নয়, তবুও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। তার মতে, পৌরসভা দায়িত্ব এড়িয়ে চলেছে।



এই প্রসঙ্গে শান্তিপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলের সদস্য শুভজিৎ দে বলেন, "পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের তথ্য সত্য হলে তা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত পদক্ষেপ নেব।" তবে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কেন আগে থেকে সচেতনতা প্রচার করা হয়নি বা কেন এতদিনে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।



পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শান্তিপুরে বায়ু দূষণের দ্রুত নিয়ন্ত্রণের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন:গাছ কাটা বন্ধ করা ও পুনরায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চালু করা।বেআইনি যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা।উৎসবের সময় জেনারেটরের ব্যবহার কমানোর জন্য বিকল্প শক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা।শহরের নাগরিকদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি করা।


শান্তিপুরে বায়ু দূষণের এই সংকট ভবিষ্যতে বড়সড় পরিবেশ বিপর্যয়ের দিকে ইঙ্গিত করছে। পৌরসভা ও স্থানীয় প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। পাশাপাশি পরিবেশকর্মীদের ও সাধারণ মানুষের সচেতনতার মাধ্যমেই শান্তিপুরকে দূষণমুক্ত শহরে পরিণত করা সম্ভব।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ